শিরোনাম:
●   আগামীতে কারা দেশ চালাবে ? …সাইফুল হক ●   বামপন্থী আন্দোলনের প্রবীণ নেতা রণোর মৃত্যুতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির গভীর শোক ●   উপজেলা নির্বাচনের সাথে স্থানীয় পর্যায়ে দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কোন সম্পর্ক নেই ●   ধারাবাহিক কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসন সকল বিরোধী রাজনৈতিক দল ও জনগণকে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে ●   রেলের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হটকারি ও মানুষের উপর নতুন অত্যাচারের সামিল ●   কাপ্তাই লেকে বেআইনী অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা দেড় বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি ●   মহান মে দিবস ও শ্রমিকশ্রেণীর মুক্তির সংগ্রাম ●   সব জিনিসের দাম বাড়লেও কমেছে শ্রমিকের দাম ●   ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে অনতিবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে বলুন ●   কাপ্তাই হ্রদের চারটি উপকেন্দ্র থেকে সাড়ে ১৫ কোটির উর্ধ্বে শুল্ক আয় করেছে বিএফডিসি
ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Kaler Dabi – কালের দাবী – Online News Portal in Bangladesh
শুক্রবার ● ১৭ নভেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » ইতিহাস - ঐতিহ্য » মজলুম জননেতা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর আজ ৪৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী
প্রথম পাতা » ইতিহাস - ঐতিহ্য » মজলুম জননেতা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর আজ ৪৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী
১১৫ বার পঠিত
শুক্রবার ● ১৭ নভেম্বর ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মজলুম জননেতা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর আজ ৪৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী

--- অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ খান :: মজুর কৃষক শ্রমিকের আপনজন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী আমৃত্যু নির্যাতিত নিপীড়িত বঞ্চিত সাধারণ মানুষের পাশে ছিলেন। তাদের সুখে-দুখে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছেন আজীবন। এ জন্যই তিনি মজলুম, এ জন্যই তিনি গণমানুষের নেতা।
অসময়ে পিতৃমাতৃহীন আবদুল হামিদ খানকে তাঁর চাচা ইবরাহীম খান শৈশবে আশ্রয় দেন। এ চাচাই তাঁকে মাদরাসায় পড়ার সুযোগ করে দেন। মাদরাসায় পড়াকালে তিনি ইরাক থেকে আগত এক পীরের স্নেহভাজন হওয়ায় ওই পীরই তাঁকে পড়তে দেওবন্দ মাদরাসায় পাঠান। দেওবন্দে পড়ালেখার সময়ে তিনি দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হন।
মাদরাসায় পড়ালেখা শেষে তিনি কাগমারিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেন। ঐ সময়ে খুব কাছ থেকে জমিদার নীলকরদের অত্যাচার নির্যাতন নিপীড়ন দেখে তিনি তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অবতীর্ণ হন। অন্যায়ের প্রতিবাদে প্রতিরোধ গড়ে তোলায় জমিদারদের রোষানালে পড়ে তাঁকে কাগমারি ছাড়তে হয়।
২২ বছর বয়সে কংগ্রেস নেতা দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের সংস্পর্শে এসে রাজনীতিতে যুক্ত হন। অসহযোগ আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার অপরাধে তাঁকে কারারুদ্ধ হতে হয়। ১৭ মাস পর মুক্ত হন।
১৯২৪ সালে সিরাজগঞ্জে এক জনসভায় মজুর কৃষক শ্রমিকের ওপর জমিদার নীলকরদের অত্যাচার নির্যাতন নিপীড়নের চিত্র জনসম্মুখে তুলে ধরার অপরাধে জন্মভূমি ছাড়তে বাধ্য হয়ে চলে যান আসামের জলেশ্বরে। আসামের ধুবড়ি জেলার ভাসানচরে এক জনসভায় পূর্ব পাকিস্তানে কৃষকের ওপর অত্যাচার নির্যাতনেরর প্রতিবাদ জানান। ওই সমাবেশে সাধারণ কৃষকরা প্রথম থেকে ভাসানচরের মাওলানা পরে ভাসানী নাম উপাধি দেয়। তখন থেকেই তাঁর পরিচয় মাওলানা ভাসানী হিসেবে।
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তিনি আসাম থেকে পূর্ব বাংলায় চলে আসেন। এসেই প্রতিষ্ঠা করেন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। পরে সংগঠনের নাম হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। ১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে যুক্ত থাকার অপরাধে আবারও কারাবরণ করতে হয় তাঁকে।
১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে যুক্তফ্রন্ট গঠন করেন। এ নির্বাচনে যুক্তফন্ট বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করে।
১৯৫৭ সালে তিনি টাঙ্গাইল কাগমারিতে এক বিশাল আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করেন। যা ইতিহাসে ‘কাগমারি সম্মেলন’ নামে খ্যাত। সম্মেলনে দেশ-বিদেশের অনেক খ্যাতিমান মানুষ যোগদান করেন। সম্মেলনে পূর্ব পাকিস্তানের বঞ্চনার চিত্ত তুলে ধরা হয়।
১৯৭০ সালের নভেম্বর মাসে পল্টন ময়দানের জনসভায় তিনি বলেন পাকিস্তান সরকার ধর্ম ও জাতীয় সংহতির নামে পূর্ব পাকিস্তানের জনগনকে শোষণ করছে। ভাষণে ‘শোষণ’ শব্দটি বার বার উচ্চারণ করে জাতীকে সতর্ক করেছিলেন তিনি। ভাষণে তিনি এও বলেছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের জনগনের উপর অত্যাচার নির্যাতন নীপিড়ন চলতে থাকলে পূর্ব পাকিস্তান একদিন স্বাধীন হয়ে যাবে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে পাকিস্তানী সৈন্যদের হত্যাযজ্ঞ শুরু পরবর্তীতে পাকিস্তানী সৈন্যরা মাওলনা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর টাঙ্গাইলের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। ভারত গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া ভাসানী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী সেনাবাহিনী আত্মসমর্পনের পর তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। কিন্তু স্বাাধীন দেশের কোন পদমর্যাদা মোহ তাঁকে প্রভাবিত করতে পারেনি। তিনি সবসময় বঞ্চিত সাধারণ মানুষের পাশে ছিলেন।
মাওলানা ভাসানী নিজে প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখায় বেশিদূর এগুতে না পারলেও শিক্ষা প্রসারে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (সন্তোষ, টাঙ্গাইল), হাজী মুহম্মদ মহসিন কলেজ (মহীপুর) ও মাওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজ (টাঙ্গাইল)।
মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সজ্জনের মূর্ত প্রতীক। তাঁর উপমা কেবলই তিনি। তাঁর জীবনাচারণ ছিল সাদামাটা সহজ সরল অনাড়ম্বর।
এই মজলুম জননেতা ১৮৮০ সালে সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা-হাজী শরাফত আলী খান, মাতা-মজিরন বেগম।
১৯৭৬ সালে ১৭ নভেম্বর মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ৯৬ বছর বয়সে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (সন্তোষ, টাঙ্গাইল) প্রাঙ্গনে তাঁকে দাফন করা হয়। হে মহান আল্লাহ, এই মজলুম জননেতাকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুন।
প্লিজ, লেখাটি কপি করলে সূত্র উল্লেখ করুন। কেননা, একটি লেখা লিখতে লেখককে অনেক পরিশ্রম, সময় ও চিন্তার সমন্বয় করতে হয়।

লেখক : অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ খান
অধ্যক্ষ, তাহের-মনজুর কলেজ,সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম।





আর্কাইভ